Close

পালিত হলো দ্বাদশ বর্ষে “আজকের প্রমিতা” র বার্ষিক অনুষ্ঠান

এক দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি আমরা, ভারতের বেশিরভাগ মানুষ যেখানে বাঁচার লড়াইয়ে জেরবার হচ্ছে সেখানে ছোট ছোট পত্র পত্রিকা, যা একপ্রকার সম্পাদকের ফুটো নৌকায় বসে দুর সীমানায় পাড়ি দেওয়ার মতো দুরহ কাজ বলা যায়, কখন মাঝ নদীতে নৌকা ডুবি হবে কেউ বলতে পারে না। তার মাঝেই হাজার ঝড় ঝঞ্ঝা কাটিয়ে, দিন রাত প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে এই করোনা কালেও কোন সংখ্যা বন্ধ না করে এই মুহূর্তে দ্বি-মাসিক পত্রিকা হিসাবে একশো দুই তম “আজকের প্রমিতা” সংখ্যা প্রকাশ করলেন পত্রিকা সম্পাদক সুখেন মণ্ডল। এই পত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠানে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য,- আয়োজন এবং বিশিষ্ট গুণিজনের উপস্থিতি যেন চাঁদের হাট, সাহিত্য সুজনদের অবশ্যই উদ্বুদ্ধ করে।
গতকাল “বিরাটী শ্যামসুন্দর মন্দির কমিটি”-র মঞ্চে তিল ধারনের জায়গা ছিলো না, মঞ্চ অলংকৃত করেছিলেন- , প্রাক্তন অধ্যাপিকা, কবি কৃষ্ণা বসু, সঙ্গীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার প্রতুল মুখোপাধ্যায়, বন্দিত সাহিত্যিক পৃথ্বীরাজ সেন, নাট্য ব্যক্তিত্ব বাদল কাঞ্জিলাল, নৃত্য নির্দেশক, অভিনেতা কল্যাণ দাশগুপ্ত, সঙ্গীতজ্ঞ মানষ রঞ্জন পান্ডে, ভাস্কর ও শিল্পী হরেন দাস, পত্রিকা সম্পাদক চম্পক কুমার দাশ, সুদিন গোলদার, অনুষ্ঠান সভাপতি রণদেব ভট্টাচার্য, পত্রিকা সম্পাদক শিতল দাস, লেখক পবিত্র বিশ্বাস এবং ভারতীয় তথ্য সাংস্কৃতিক বিভাগের আধিকারিক অমিত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখেরা। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন মল্লিকা রায়, সুখেন মণ্ডল তার স্বাগত ভাষণে বলেন “কবিঘর”-এর দরজা খুলে রাখার জন্য আমি ভিক্ষা করতেও রাজি আছি, নতুন নতুন লেখক ও কবি তৈরি করার ক্ষেত্রে আমি লড়াই চালিয়ে যাবো। বিশিষ্ট গুণিজনেরা তাঁদের বক্তব্যে এই বাংলার সাহিত্য কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সুখেন মণ্ডলের সঙ্গে আমরা আছি এবং থাকবো। সাহিত্য প্রীতি, সাহিত্য সমন্বয় কে আরো সুদৃঢ় করার কথা বলেন, এবং এই ক্ষয়িষ্ণু সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে কলম যে বিশেষ হাতিয়ার সে কথাও জানান।
উক্ত মঞ্চে আহ্বায়ক শ্যামল তালুকদারের তত্ত্বাবধানে বেশকিছু স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীদের শিক্ষন সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। মঞ্চে বিশেষ চমক দেন সঙ্গীত শিল্পী ও সুরকার পাপিয়া দত্ত, সুখেন মণ্ডলের গীত রচনায় নিজস্ব সুরে দুটি সঙ্গীত পরিবেশনে। কবি সুজিতকুমার সেন তার নিজের আঁকা কবি নজরুল ইসলামের একটি ছবি সুখেন মণ্ডলের হাতে তুলে দেন। মঞ্চে উপস্থিত কবি বা লেখকেরা তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠে দর্শকদের মুগ্ধ করেন, সবথেকে কনিষ্ঠতম বাচিক উৎসব দাস একটা কবিতা পাঠ করে, সমগ্র অনুষ্ঠানের সুন্দর সঞ্চালনায় ছিলেন লেখক,কবি সোমনাথ সরকার, এবং বাচিক প্রিয়রঞ্জন দে। উক্ত মঞ্চে প্রায় সত্তর জন সাহিত্য সুজন দের “সাহিত্য সাথী-2022” স্মারক সম্মান প্রদান করা হয়। সর্বোপরি আজকের প্রমিতার সর্বক্ষণের সহযোদ্ধা যাদের নাম উল্লেখনীয় তারা হলেন আহ্বায়ক আশীষ ঘোষ, প্রণব কান্তি রায়, নারায়ণ সর্দার, কানাই সর্দার, শোভন কর, দীপ্তি রায় ছাড়াও সাংবাদিক পিন্টু মাইতি। বিশেষ ভাবে সন্মানিত করা হয় সাংবাদিক ,কবি, জাদুকর ইন্দ্রজিৎ আইচ কে।তার হাতে স্বরক তুলে দেন বিখ্যাত সাহিত্যিক পৃথীরাজ সেন। উত্তরীয় ও ব‍্যাচ পরিয়ে দেন আজকের প্রমিতার সম্পাদক সুখেন মন্ডল। অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সাংবাদিক ইন্দ্রজিৎ আইচ। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত বিশারদ, সঙ্গীত শিল্পী (রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়) অনিতা সাহা-র অনুপস্থিতিতে তাঁর সুযোগ্য সন্তান অভিক সাহার হাতে স্মারক ও মানপত্র প্রদান করা হয়।সব মিলিয়ে আজকের প্রমিতা র আয়োজনে সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানটি এক কথায় সার্থক হয়ে উঠেছিলো।

Leave a Reply

0 Comments
%d bloggers like this:
scroll to top